মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে আজ বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ভুটানের। চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাতটায় শুরু হবে খেলা।
অতীতের পরিসংখ্যানের দিকে চোখ রাখলে ভুটানকে নিয়ে অত দুশ্চিন্তা করার কথা নয় বাংলাদেশের। মেয়েদের ফুটবলে এ পর্যন্ত সিনিয়র ও বয়সভিত্তিক দল মিলিয়ে চারবার দুই দল মুখোমুখি হয়েছে। সব কটি ম্যাচেই জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১০ কক্সবাজারে মেয়েদের সাফে প্রথমবার ভুটানকে ৯-০ গোলে, ২০১২ সালে কলম্বোতে ১-০ ব্যবধানে, নেপালে ২০১৫ এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপে ১৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। আর গত বছর ঢাকায় শেষ মুখোমুখিতে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের জয় ৩-০ গোলে।
গত টুর্নামেন্টের চেয়ে ভুটানকে এবার বেশ শক্তিশালী মনে করা হচ্ছে। কারণ গেলেফু ফুটবল একাডেমিতে এক বছর ধরে এই টুর্নামেন্টের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। মেয়েদের ফুটবলের উন্নয়নে কোরিয়ান কোচ সুং জে লি দুই বছর ধরে কাজ করে চলেছেন। ভুটানের ফুটবলে যে উন্নতি হচ্ছে, মাঠের খেলায় এরই মধ্যে সেটার প্রমাণ রেখেছে দলটি। শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ম্যাচে ৬-০ গোলে হারিয়ে ভুটানের নারী ফুটবলের ইতিহাসে তুলে নিয়েছে প্রথম জয়। পরের ম্যাচে ভারতের কাছে ১-০ গোলে হারলেও দুর্দান্ত খেলেছে ভুটানি মেয়েরা। বিশেষ করে ফরোয়ার্ড দেকি হ্লাজোম ও মিডফিল্ডার সোনম হ্লামো খেলছে দুর্দান্ত। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছে সোনম।
সুতরাং বদলে যাওয়া এক ভুটানকেই আজ সামনে পাবে বাংলাদেশের মেয়েরা। তার ওপরে যোগ হয়েছে ঘরের মাঠে স্বাগতিক দর্শকদের সমর্থন। এসব জেনেও বাংলাদেশের কোচ বলছেন, ‘ভুটান ভালো খেলেই সেমিফাইনালে উঠেছে। ওরা মাঠ ও দর্শকের সুবিধা পাবে। কিন্তু আমাদের মেয়েরাও বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভালো খেলছে। ওরা এখন পুরোদস্তুর পেশাদার। সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। ওরা গত দুই ম্যাচের মতো স্বাভাবিক খেলাটা খেললে ভুটানের বিপক্ষে জিতব। জয়ের জন্য শতভাগ উজাড় করেই খেলবে মেয়েরা।’
গতকাল সবাই অনুশীলন করলেও মিডফিল্ডার মণিকা চাকমা ছিল টিম হোটেলে। সামান্য চোট থাকায় তাকে আইসবাথ দিয়েছেন সহকারী কোচ সাবিনা খাতুন। যদিও সাবিনা জানিয়েছেন চোট ততটা গুরুতর নয়, ‘মণিকা অনুশীলনে একটু বেশি পরিশ্রম করেছে। এ জন্য আজ (কাল) ওকে আইসবাথ করতে বলেছেন কোচ। আশা করি, কাল (আজ) সে খেলতে পারবে।’
গত ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে প্রথম গোল এসেছে ৪৫ মিনিটে। তবে আজ দ্রুতই গোল চান কোচ, ‘আমাদের দলের যে গতি, মেয়েদের মধ্যে যে বোঝাপড়া, সব মিলিয়ে প্রথমেই গোল পেয়ে গেলে গোলসংখ্যাও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আর গোল করতে দেরি হলে মেয়েরা মানসিকভাবে চাপে পড়ে যাবে। তাই আমরা চাইব দ্রুত গোল তুলে নিতে।’
গোল দ্রুত বা পরে আসুক, বাংলাদেশের প্রয়োজন তো জয়। আর তা পেলেই টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছে যাবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ।